বৃহস্পতিবার ভোর থেকে চালানো হামলায় শুধু গাজা সিটি ও উত্তর গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬৪ জন। আর নেটজারিম করিডোরের কাছে, যেখানে মানুষ খাদ্য সহায়তা পেতে জড়ো হয়েছিলেন, সেখানে ইসরায়েলি গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও ১৬ জন।
এই করিডোরই গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অংশকে আলাদা করেছে। প্রতিদিন সেখানে খাবার পাওয়ার আশায় ভিড় করেন হাজারো মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামের একটি সংস্থা সেখানে সহায়তা দেয়, যার বিরুদ্ধে জাতিসংঘ ‘সহায়তার অস্ত্রায়ন’-এর অভিযোগ তুলেছে।
ঘটনাস্থলে থাকা বাসাম আবু শা’আর বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘বুধবার রাত একটার দিকে হঠাৎ ট্যাংক, বিমান আর ড্রোন থেকে একযোগে গুলি আর বোমা বর্ষণ শুরু হয়। কেউ পালাতে পারেনি, কেউ কাউকে সাহায্যও করতে পারেনি।’
গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকা থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজ্জুম জানান, ‘এখন গাজায় সহায়তার লাইনে যাওয়া মানেই মৃত্যুর ঝুঁকি নেওয়া। টানা তিন মাসের অবরোধে খাদ্য, পানি, ওষুধ-সব কিছুই ফুরিয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এইসব কেন্দ্রে যে খাবার দেয়া হচ্ছে, সেগুলো পুষ্টিহীন। তারপরও মানুষ ছুটে যাচ্ছে কারণ ক্ষুধা এখন যুদ্ধের থেকেও বড় শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
অন্যদিকে, গাজার আল-শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে যেখানে মানুষ মোবাইল ও অন্যান্য ডিভাইস চার্জ দিচ্ছিলেন, সেখানে চালানো ড্রোন হামলায় ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎহীন গাজায় এইসব চার্জিং পয়েন্টই মানুষের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছিল।
রয়টার্সকে দেয়া বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, নেটজারিম এলাকায় তাদের দিকে কিছু ‘সন্দেহভাজন’ ব্যক্তি এগিয়ে যাচ্ছিলেন বলে তারা সতর্কতামূলক গুলি ছোড়ে। তবে আহত বা নিহত হওয়ার কোনো তথ্য তারা দেয়নি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৯ জনের মরদেহ ও ২২১ জন আহত ব্যক্তিকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫৫ হাজার ৭০৬ জন নিহত এবং এক লাখ ৩০ হাজার ১০১ জন আহত হয়েছেন।
0 Comments